গ্রামের বাণিজ্য মেলা...

avatar

ঢাকা, চট্টগ্রাম কিংবা বড় বড় জেলা কিংবা বিভাগীয় শহরগুলোতে প্রায় প্রতি বছরই বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়৷ এইসব মেলাগুলো ২-১ দিনের জন্য না, বরং ১০ থেকে শুরু করে ৩০ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের ব্যাবসায়ী ও উদ্যোক্তারা তাদের উৎপাদিত নানা ধরনের পণ্য ও সেবা নিয়ে মেলায় এসে হাজির হোন ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে। সাধারণ মানুষও বিপুল উৎসাহ, উদ্দীপনার মাঝে মেলাটিকে রাঙিয়ে তুলে।

তবে বড় কোনো জেলা শহরের বাইরে এসে ছোট কোনো গ্রামে বাণিজ্য মেলার দেখা পাবো, এমন আশা কখনো করি নি। এমন না যে গ্রাম গঞ্জে মেলা বসে না। অবশ্যই বসে। ছোট বেলা থেকেই গ্রাম গঞ্জের নানা রকমের মেলা দেখে দেখেই বড় হয়েছি। তবে বাণিজ্য মেলাটা সেসব থেকে কিছুটা হলেও ব্যাতিক্রম।

গত বছর হুট করে আমাদের গ্রামের এদিকটাই বাণিজ্য মেলা নামে ছোট খাটো একটা মেলার আয়োজন করার চেষ্টা করা হয়েছল। সে বছরই মেলার অভাবনীয় সাফল্যের পর এবার একটু বড় পরিসরে আয়োজন করার চেষ্টা করেছে আয়োজক কমিটি। তাদের সেই চেষ্টা যে বিফলে যায় নি, তার নমুনা পেয়েছিলাম মেলা প্রাঙ্গনে উপস্থিত হয়ে। মেলা শুরুর আগেই মেলা প্রাঙ্গনে মানুষের আনাগোনা ও ব্যাবসায়ীদের গোছগাছ করার ব্যাস্ততায় মুখরিত।

তবে এখানে এসে একটা বিষয় অনুধাবন করলাম। এই ধরনের মেলায় পন্যের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের রাইডের ব্যাবস্থা থাকে। যেন মানুষজন তাদের পরিবার ও ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় আসার আগ্রহ পায়৷ কারণ বাচ্চাদের কোলাহলে যে কোনো স্থানের সৌন্দর্য বহুগুনে বৃদ্ধি প্রায়। গতকাল আমিও আমার এক ভাগিনাকে নিয়ে গ্রামের সেই বাণিজ্য মেলায় উপস্থিত হয়েছিলাম।

বাংলাদেশে শিশু কিশোরদের জন্য বর্তমানে যে কয়েকটা জনপ্রিয় রাইড ছিল, প্রায় সবগুলাই এই মেলায় বসানো হয়েছে। বাচ্চাকাচ্চাদের আনন্দিত হওয়ার কথা। আর সেকারণেই মেলা শুরুর আগেই মেলাস্থানে ভীড় লেগে আছে৷ যদিও সবগুলো রাইড এখনো চালু হয় নি। কিন্তু তাতে কী? দেখতে তো কোনো সমস্যা নেই, তাই না?

এখানকার সবচেয়ে জনপ্রিয় রাইড সম্ভবত এই ম্যাজিক নৌকা। গতবছর স্থানীয় এক রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম৷ রেস্টুরেন্টের নাম কুড়েঘর। একটা পুকুরের উপর ছোট ছোট কুড়েঘর বানিয়ে খুব ভালই ব্যাবসা করছে তারা। গতবছর কোনো এক লেখায় আমি সেই গল্প করেছিলাম। সেই রেস্টুরেন্টের অন্যতম আকর্ষণও ছিল কিন্তু এই ম্যাজিক নৌকা।

এই রাইডটাতে চড়তে আমার ভয় লাগে। তবুও ভাগিনার আবদারের চোটে শেষ পর্যন্ত চড়তে বাধ্য হয়েছিলাম। অস্বীকার করব না, রাইড চালু হবার পর প্রচন্ড ভয় পেয়েছিলাম এই ভেবে যে হুট করে আবার রাইড থেকে ছিটকে পড়ি কিনা। তবে শেষ পর্যন্ত কিছুই হয় নি৷

নাগরদোলায় চড়ারও শখ হয়েছিল। তবে সেটি তখনোও চালু হয় নি৷ ছোটবেলায় একবার নাগরদোলায় চড়েছিলাম। সেবার ভয়ে কান্নাকাটি করেছিলাম। এরপর আর চড়া হয় নি। সেই স্মৃতি এখনো মনে আছে আমার। ভেবেছিলাম কখনো সুযোগ পেলে চড়ব, কিন্তু সেই সুযোগ এখনো পাই নি।

আরো কয়েকটা রাইড ছিল, যেগুলো তখনো চালু হয় নি। আশা করি মেলা শুরু হবার সাথে সাথে এইসব রাইডগুলো শিশু কিশোরদের আকর্ষণ ধরে রাখতে পারবে। সবমিলিয়ে বেশ ভাল একটা দিন ছিল কাল...



0
0
0.000
2 comments
avatar

One of my small regrets I never got the opportunity to go to this type of village Festival.

0
0
0.000