চলে ঘোরগাড়ি
চাঁদনী রাইতে নদীর ওপারে
আকাশ থেইকা নামলো পরী,
আমার চোখে চলে ঘোরগাড়ি
আমি হাবলায়, নদীর এপারে
ঘুমের ঘোরে দেখি তারে
ছবির মত ডাকে আমারে ।
গত দুইদিন ধরে রাতের আকাশ ও আবহাওয়াটা খুব মনোমুগ্ধকর লাগছে। সেদিন প্রচণ্ড শরীর ব্যথা, বের হবনা ভেবেও বের হয়েছিলাম, ৫ বছর ধরে যেখানে যাওয়া হয়নি সেখানে যাওয়া হলো আড্ডা দেবো বলে, সে কি জোশ একটা আবহাওয়া, শরীর-মন দুটোই চাঙা হয়ে গিয়েছিল একদম। আজ আবার সেখানে, গত দিনের চেয়ে একটু বেশি সময় ও উপভোগ করার আমেজ নিয়ে। আজও এখানের রাতের প্রকৃতি আমাদের গ্রহণ করে নিয়েছে তার কাছে, আপ্যায়ন করেছে শীতল বাতাস ও মনোমুগ্ধকর জ্যোৎস্নার আলোতে।
হুটহাট এমন আড্ডা দেওয়ার জায়গা পরিবর্তনের যে ব্যাপারটা এটা বেশ মজাদার। একেক সময় একেক পরিস্থিতি ও পরিবেশ ভিন্ন ভিন্ন আয়োজনের ব্যবস্থা করে আমাদের জন্য।
কখনো কখনো দূরে কোথাও ঘাঁটি গড়তে হয় বিধায় সেরুপ জায়গার খোঁজ, কখনো বা নিজ এলাকায় বিচরণের জায়গায় আড্ডা। কখনোবা বিশাল বন্ধুদের সুবিধামতো শহরের মাঝে ব্যস্তময় জায়গায় মানিয়ে নেওয়া আবার কখনোবা গুটি কয়েক বন্ধু নিয়ে নির্জন কোথাও নিজেদের মতো করে আড্ডা দেওয়া। কখনো বা চায়ের দোকান কখনো বা খোলা মাঠ, কখনো বা স্টেশনের হযবরল ব্যস্তময় জায়গা কখনো বা নদীর তীর ঘেঁষে নিস্তব্ধ পরিবেশে মিলিয়ে যাওয়া। জীবন যেখানে যেমন একটা প্রবাদ আছে, সে রুপ এই বিষয়টিও বিভিন্নভাবে পরিবর্তন, পরিমার্জন হয়।
তবে এই-যে এই দুদিনের এখানে সময়গুলো অনেক কিছু মনে করিয়ে দিয়েছে। প্রায় ৫ বছর পর এখানে আড্ডা! জায়গাটায় বসে সহজেই বুঝতে পারতে ছিলাম তখনের আমি আর এখনের আমি এর মাঝের বিশাল তফাত খানি। তখনের মন-মানসিকতা, চিন্তাভাবনা ও আশেপাশের মানুষগুলো, যা আজ সম্পূর্ণ ভিন্ন। তখন যাদের সাথে এখানে আসতাম আজ কিন্তু তাদের একজনও ছিলনা, দূরে অনেক দূরে তারা, হয়তো এজন্যই আসা হয়নি এতোদিন। নদীর ন্যায় জীবনও চির বহমান, থেমে থাকে না, চলতে থাকে। এদিকের পথে বাধা তাতে কি, একটু বাক নিয়ে নতুন পথ খুঁজে নিতে হয়, যেমনটা এই ৫ বছরের পার্থক্য আমাকে দেখিয়ে দিয়েছে। একই অবস্থানে এই আমি, তবু মাঝখানে বিশাল সময়ের ব্যবধানে বিশাল সব পরিবর্তন, হিসেব কষলে উওরে দেখা যাবে পুরো জীবনটায় যেন বদলে গিয়েছে। থাক, সেসব জটিল হিসেব আর কষতে হবেনা, যা বেরিয়েছে তাতেই অনেক।
আগামী কয়েকদিন কিংবা কয়েক সপ্তাহ এখানেই যাওয়া হবে, পুরনো স্মৃতিচারণ এবং প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর আতিথেয়তা গ্রহণ। যতদিন চলবে ততদিন সেখানে তারপর নতুন আসরের খোঁজে।
তিতাস নদী নাকি!
হুম, শাখা।